পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ৫ম অধ্যায়: সুখী-সুন্দর-সমৃদ্ধ জীবনবোধের ধারণা থেকেই মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাষ্ট্রীয় সংগঠনের অধীনে বসবাস এবং রাষ্ট্রের প্রতি স্বভাবজাত আনুগত্য প্রদর্শন করে আসছে। মানুষের একান্ত প্রত্যাশা যে, তাদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য রাষ্ট্র অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
অর্থাৎ রাষ্ট্র ব্যক্তির জন্য অধিকার সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব বিকাশের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। নাগরিকগণ যখন রাষ্ট্র সৃষ্ট অনুকূল পরিবেশে অধিকার উপভোগের সুযোগ লাভ করে তখন তার উপর কতকগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্তায়। নাগরিকের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং মানবাধিকার সম্পর্কে জাতিসংঘের ঘোষণা ইত্যাদি বিষয়ে এই অধ্যায়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
উত্তর: একজন নাগরিক রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের জন্য যেসব অধিকার ভোগ করে তাকে রাজনৈতিক অধিকার বলে। রাষ্ট্র প্রদত্ত বিভিন্ন অধিকারের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অধিকার হলো রাজনৈতিক অধিকার। এ অধিকার বলে নাগরিকগণ রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে থাকে। সভা, সমাবেশের অধিকার, ভোটদানের অধিকার, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার, রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার ইত্যাদি হলো রাজনৈতিক অধিকার।
উত্তর: মানুষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত যে সকল দায়িত্ব পালন করে সেগুলোই অর্থনৈতিক কর্তব্য। নাগরিকের বেশকিছু অর্থনৈতিক কর্তব্য আছে। এগুলো হলো- নিয়মিত কর প্রদান, খাজনা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ সংরক্ষণ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নিজ ভূমিকা রাখা ইত্যাদি। অর্থনৈতিক কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়েই মানুষ অর্থনৈতিক অধিকার ভাগ করতে পারে।
উত্তর: যে আইনের দ্বারা নাগরিকগণ দেশের সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি যেকোনো সংস্থার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার অধিকার লাভ করে তাকে তথ্য অধিকার আইন বলে। বাংলাদেশে ২০০৯ সালের ৫ই এপ্রিল এ বিষয়ক একটি আইন পাশ হয় যা তথ্য অধিকার আইন হিসেবে পরিচিত।
তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এ আইন প্রণীত হয়। এ আইনটি চালু হওয়ার পূর্বে যেসব তথ্য গোপন ছিল, এখন জনগণ তা জেনে নিজেদের অধিকার যেমন ভোগ করতে পারবে, তেমনি সেসব প্রতিষ্ঠানের কাজের ওপর নজরদারি স্থাপন করে তাদের কাজকে আরও নিয়মতান্ত্রিক ও সত্যনিষ্ঠ করে তুলতে পারবে।
উত্তর: রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে ব্যক্তি যে মর্যাদা ও সম্মান পেয়ে থাকে, তাকে নাগরিকতা বলে। প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো রাষ্ট্রের নাগরিক। তবে নাগরিকতার মর্যাদা পেতে হলেও কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। যে ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে, রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে, রাষ্ট্র প্রদত্ত অধিকার ভোগ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য পালন করে সে ব্যক্তিই ঐ রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত হবে। নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তিই নাগরিকতার মর্যাদা ভোগ করে।
উত্তর: কোনো নাগরিকের রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত বিধানাবলি সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে তথ্য পাওয়ার অধিকারকে তথ্য অধিকার বলে। তথ্য অধিকার নাগরিকের অন্যতম রাজনৈতিক অধিকার। বাংলাদেশের তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ দ্বারা নাগরিকের তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে প্রত্যেক নাগরিক কর্তৃপক্ষের নিকট হতে তথ্য লাভের অধিকার রাখে। আর কোনো নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকে।
উত্তর: চারটি রাজনৈতিক অধিকার হলো- i. রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অধিকার; ii. নির্বাচনের অধিকার; iii. আবেদন করার অধিকার; iv. সরকারি চাকরি লাভের অধিকার।
উত্তর: সাধারণভাবে অধিকার বলতে বোঝায় সমাজের সকলের জন্য কল্যাণকর কতগুলো সুযোগ-সুবিধা যা ব্যতীত মানুষ তার ব্যক্তিত্ব পূর্ণরূপে বিকাশ করতে সক্ষম হয় না। অধিকার সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত। অধিকার ব্যতীত ব্যক্তির জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। সুতরাং সামাজিক জীব হিসেবে ব্যক্তি যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে তাই অধিকার। সমাজে বসবাসকারী সকল মানুষের পারস্পরিক স্বীকৃত দাবিই অধিকার।
উত্তর: রাষ্ট্র প্রদত্ত সুযোগ সুবিধাকে নাগরিক অধিকার বলে। নাগরিক অধিকার হলো এমন কতকগুলো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা যা সকল নাগরিকের জন্য আবশ্যক। এ অধিকারসমূহ সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত। অন্যভাবে বলা যায়, ‘অধিকার হলো সমাজ জীবনের সেসকল অবস্থা (সুযোগ-সুবিধা) যা ছাড়া মানুষ তার ব্যক্তিত্বকে উপলব্ধি করতে পারে না।’ অধিকারের মূল লক্ষ্য হলো ব্যক্তির সর্বজনীন কল্যাণ সাধন।
উত্তর: রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে গতিশীল, সচল, ন্যায়ানুগ ও প্রাণবন্ত করার জন্য নাগরিকদের কর্তব্য পালন করা উচিত। নাগরিকদের কর্তব্য পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে নাগরিকদের কর্তব্য পালনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়েই ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে উন্নতি লাভ করা যায়। রাষ্ট্র ও সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা কেবল কর্তব্য পালনের মাধ্যমেই সম্ভব।
উত্তর: মানুষ সমাজবদ্ধ প্রাণী হিসেবে সমাজ স্বীকৃত যেসকল অধিকার ভোগ করে তার বিপরীতে তাকে সমাজ ও মানুষের প্রতি যেসকল দায়িত্ব পালন করতে হয় সেগুলোকে সামাজিক কর্তব্য বলে। মানুষ সামাজিক কর্তব্যগুলো সঠিকভাবে পালন না করলে সমাজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে ওঠে। সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে তোলা ও বজায় রাখা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা, সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন ও অংশগ্রহণ, সন্তান-সন্ততিকে সংস্কৃতিবান করে গড়ে তোলা, বিভিন্ন বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এগুলো সবই সামাজিক কর্তব্যের উদাহরণ।
উত্তর: নৈতিক অধিকারের ফলে মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক মজবুত হয় এবং সমাজজীবন সুন্দর ও স্বার্থক হয়ে উঠে। এভাবে নৈতিক অধিকার সমাজকে দৃঢ় করে। সমাজের নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে জন্ম নেয় নৈতিক অধিকার। মানুষের নৈতিক অধিকারকে আইনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা না গেলেও সমতার ভিত্তিতে ন্যায়বিচার সমন্বিত সমাজ গঠনে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখন নৈতিক অধিকার বাস্তবায়িত হয় তখন আইনগত অধিকার বাস্তবায়নের পথ সুগম হয়।
উত্তর: ব্যক্তি সমাজ জীবনে, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যেসব সুযোগ-সুবিধার দাবিদার হয় এবং যা ব্যতীত তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে না তাই মানবাধিকার। মূলত মানবাধিকার অধিকারেরই একটি বিস্তৃত রূপ, যা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। মানবাধিকার কোনো দেশ বা কালের সীমানায় আবদ্ধ নয় বরং এ অধিকার সব দেশের সব কালের। মানবাধিকার একই সাথে জন্মগত ও প্রাকৃতিক অধিকার।
উত্তর: মৌলিক অধিকার বলতে নাগরিক জীবনের বিকাশ ও ব্যক্তির জন্য ঐ সমস্ত অপরিহার্য শর্তাবলি বা সুযোগ- সুবিধাকে বোঝায় যা সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংবিধান হতে প্রাপ্ত এবং যা সরকারের নিকট অলঙ্ঘনীয়। মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রের সংবিধানে সন্নিবেশিত ও বলবৎযোগ্য থাকে।
মৌলিক অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত হলে সে আদালতের মাধ্যমে তার অধিকার ফেরত পেতে পারে। এক্ষেত্রে আদালত রায়ের মাধ্যমে সরকারকে ঐসব অধিকার বঞ্চিত ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেওয়ার হুকুম দিতে পারে। বাংলাদেশ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৭ থেকে ৪৪ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
উত্তর: নাগরিকের একটি প্রধান কর্তব্য হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য পোষণ করা। রাষ্ট্র দ্রোহীমূলক কোনো কার্যকলাপে লিপ্ত না হওয়া। নাগরিকের আরেকটি প্রধান কর্তব্য হলো রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য পোষণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের আইন তথা সংবিধান মেনে চলা। প্রচলিত আইনের পরিপন্থি হয় এমন কাজ না করা।
উত্তর: রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা করা যায়। মানবাধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছাড়া সুশাসন অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই যেকোনো রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা তথা আইনের শাসনের মাধ্যমে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
উত্তর: ব্যক্তির জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য সমাজ এবং রাষ্ট্রের মাধ্যমে পাওয়া স্বীকৃত ও সংরক্ষিত সুযোগ- সুবিধাকে অধিকার বলে। অধিকার কথাটি অত্যন্ত ব্যাপক। একজন নাগরিকের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধাই এর অন্তর্ভুক্ত। অধিকারের মূল লক্ষ্য ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও সর্বজনীন কল্যাণ সাধন।
রাষ্ট্র কোনো বিষয়কে অধিকার হিসেবে তখনই বিবেচনায় নেয়, যখন সেটি সবার জন্য কল্যাণকর মনে হয়। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ, এমন কোনো দাবি অধিকার হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মত প্রকাশ, পরিবার গঠন, শিক্ষালাভ, নির্বাচনে ভোট দান প্রভৃতি নাগরিকের অধিকার।
উত্তর: সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী তিনজন সদস্যের সমন্বয়ে বাংলাদেশ তথ্য বা কমিশন গঠিত হয়। ২০ অক্টোবর, ২০০৮ তারিখে বাংলাদেশে ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’ জারি করা হয়। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর ১১(১) উপধারার বিধান মতে আইন জারির ৯০ দিনের মধ্যে ১ জুলাই, ২০০৯ তারিখে প্রধান তথ্য কমিশনার ও ২ জন তথ্য কমিশনার, তন্মধ্যে ১ জন নারী সমন্বয়ে তথ্য কমিশন গঠন করা হয়। জুলাই, ২০০৯ থেকেই তথ্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
উত্তর: রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে রাজনৈতিক অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে নাগরিককে যেসব কর্তব্য পালন করতে হয়, তাকে রাজনৈতিক কর্তব্য বলে। মানুষ শুধু সামাজিক জীবই নয়, সে রাজনৈতিক জীবও বটে। রাজনৈতিক জীব হিসেবে মানুষের রয়েছে বেশকিছু রাজনৈতিক কর্তব্য।
এগুলো হলো- রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা, রাষ্ট্র প্রণীত আইন মেনে চলা, সততা ও সতর্কতার সাথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা, প্রয়োজনে রাষ্ট্রের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এগিয়ে আসা প্রভৃতি।
উত্তর: রাজনৈতিক অধিকারের মাধ্যমে মানুষ রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। তাই যোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে রাজনৈতিক অধিকার অপরিহার্য। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে এমন একটি বিষয় যে কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মানুষ তার মধ্যে অধিকার সচেতনতাবোধ জাগ্রত করতে পারে। এখানে মানুষ রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ লাভ করে। এভাবে উন্মুক্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগের মাধ্যমে যোগ্য ও যথার্থ নেতৃত্ব গড়ে ওঠে।
উত্তর: নৈতিক অধিকার বলতে আমরা সেসব অধিকারকে বুঝি যেগুলো নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে উদ্ভূত। সমাজের নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে নৈতিক অধিকারের উদ্ভব। যেমন- দরিদ্র্যের সাহায্য পাওয়ার অধিকার। নৈতিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক প্রবর্তিত নয়।
এ অধিকার ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পারে না। তবে নৈতিক অধিকারের পেছনে সমাজের সমর্থন রয়েছে। কোনো ব্যক্তি এ অধিকার ভঙ্গ করলে সমাজে তার তীব্র সমালোচনা হতে পারে। সার্থক ও সুন্দর সামাজিক জীবনের জন্যে নৈতিক অধিকার অত্যাবশ্যক। নৈতিক অধিকার ব্যক্তি ও সমাজভেদে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে।
উত্তর: আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার বলতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান মর্যাদা নিশ্চিত হওয়াকে বোঝায়। আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার নাগরিকের একটি উল্লেখযোগ্য সামাজিক অধিকার। এ অধিকার বলে নাগরিকদের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী-পুরুষ প্রভৃতিভেদে কোনোরূপ বৈষম্য না করে অপরাধীকে তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং সম্মানজনক কাজের মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি দিতে হবে। তাহলেই আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
উত্তর: অধিকার রক্ষাকবচ বলতে যে ব্যবস্থার মাধ্যমে নাগরিকের অধিকার রক্ষা করা যায়, তাকে বোঝায়। বর্তমান বিশ্বে ব্যক্তির বিকাশ এবং সুসভ্য সমাজ জীবনের জন্য অধিকার অত্যাবশ্যক। রাষ্ট্র নাগরিকের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধিকারসমূহ প্রবর্তন ও তা সংরক্ষণ করে থাকে। সাধারণত যে বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বনের মাধ্যমে অধিকারকে রক্ষা করা যায়, তাকে অধিকারের রক্ষাকবচ বলে। যেমন- আইনের অনুশাসন, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি।
উত্তর: বিশ্বায়ন বলতে বোঝায় পুঁজি, অর্থ, সম্পদ ও প্রযুক্তির এক স্থান থেকে অপর স্থানে চলাচল। অর্থাৎ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের উৎপাদন বা প্রযুক্তির যেকোনো উপাদান অবাধে অন্য যেকোনো প্রান্তে চলাচলের সুযোগ লাভ করবে। এর ফলে সমগ্র বিশ্বের সকল জনগণের কাছে সকল সুযোগ-সুবিধা ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দ্বার উন্মোচিত হবে। মুক্তবাজার অর্থনীতি বিশ্বায়নেরই ফল।
উত্তর: পরিবারের প্রতি নাগরিকের কর্তব্য হলো বয়স্করা ছোটদের শিক্ষাদানসহ বিভিন্নভাবে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। আর ছোটরা বড়দের শ্রদ্ধা করা, আদেশ মান্য করা সহ বিভিন্ন কর্তব্য পালন করবে। পরিবার প্রথম সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মানবসমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবারের সৃষ্টি সেই প্রাচীনযুগে।
পরিবারই শিশুকে সমাজের উপযুক্ত সদস্য হিসেবে গড়ে তোলায় মুখ্য ভূমিকা রাখে। পরিবারে পিতামাতার অন্যতম কর্তব্য হলো শিশুকে উপযুক্ত শিক্ষাদান করা এবং যথাযোগ্যভাবে গড়ে তোলার জন্য সামগ্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পরিবারের বয়স্কদের ভরণপোষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যদের অন্যতম দায়িত্ব।
আশাকরি “নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য এবং মানবাধিকার – পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ৫ম অধ্যায়” নিয়ে লেখা আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। পৌরনীতি ও সুশাসন এর সকল অধ্যায় এর প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে ক্লিক করুন। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।
Leave a Reply