ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে এবং ইউরোপের কোন দেশে কি কি কাজ পাওয়া যায় এসব বিষয় নিয়ে আজ আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি ইউরোপ যেতে চান এবং ইউরোপ গিয়ে কি কি কাজ করতে পারবেন জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তবে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কারণ, আমি আজ আপনাদের সাথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলচনা করবো। তো আর দেরি কিসের, চলুন পোস্টের মূল বিষয়ে ফিরে আসা যাক।
ইউরোপের কোনো দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চাইলে আমাদের মাথায় প্রথমেই একটি প্রশ্ন আসে যে, ইউরোপের কোন দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে? ইউরোপের প্রায় সকল দেশ অনেক উন্নত এবং তারা প্রতিনিয়ত অনেক শ্রমিক নিয়ে থাকে। কিন্তু, ইউরোপের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া সহজ নয়।
ইউরোপের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চাইলে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। তো চলুন, ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে জেনে নেয়া যাক।
ইউরোপ একটি মহাদেশ। এই মহাদেশে রয়েছে প্রায় ৫০টিরও বেশি দেশ। তবে, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের সকল দেশে যাওয়া যায় না। হাতে গোনা কয়েকটি দেশে বাংলাদেশ থেকে যেতে পারবেন। নিচে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায় তার একটি তালিকা উল্লেখ করে দিয়েছি।
বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ইউরোপের এসব দেশে যেতে পারবেন এবং কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তবে, একেক দেশে যেতে চাইলে খরচ একেক রকম হবে। নিচে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে তা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে একেক রকম খরচ হয়ে থাকে। তবে, ইউরোপের যেকোনো দেশে যেতে চাইলে গড়ে ৮-১০ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। আপনি যদি ইউরোপের যেকোনো দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে ৮ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা বা এর বেশিও লাগতে পারে। তবে, সরকারীভাবে ইউরোপের যেকোনো দেশ যেতে চাইলে অল্প খরচে যেতে পারবেন।
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে তা দেশের নাম অনুযায়ী নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি। চলুন, জেনে নেয়া যাক।
জার্মানি যেতে ভিসা ফি, ভিসা প্রসেসিং, এয়ার টিকেট এবং আনুসাঙ্গিক খরচ সহ মোট ৮-১২ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জার্মানি যেতে চাইলে এই পরিমাণ খরচ হবে। তবে, আপনি যদি জার্মানি উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে চান, তবে ৯-১০ লক্ষ টাকার মাঝে যেতে পারবেন। তবে, এজন্য প্রথমেই জার্মানির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্ধারিত পরিমাণে অর্থ জমা করতে হবে।
ইউরোপ যেতে চান এমন মানুষদের মাঝে অধিকাংশ মানুষই ইতালি যেতে ইচ্ছুক। বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে চাইলে ভিসা ফি, ভিসা প্রসেসিং, এয়ার টিকেট ফি এবং অন্যান্য সকল খরচ মিলিয়ে ৯-১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে। তবে, আপনি যদি সিজনাল ভিসায় ইতালি যেতে চান, তবে ৪ লক্ষ টাকায় ইতালি যেতে পারবেন।
এছাড়াও, ইতালি ভিজিট ভিসায় যেতে চাইলে ৩-৪ লক্ষ টাকা লাগে এবং ইতালি স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চাইলে ৬০ হাজার টাকা লাগে প্রাথমিক খরচ। এরপর, অন্যান্য খরচ মিলিয়ে পরবর্তীতে আরও বেশি খরচ হয়ে থাকে।
বিদেশ যেতে ইচ্ছুক এমন মানুষের মাঝে সার্ভে করলে দেখা যাবে অধিকাংশ মানুষই রোমানিয়া যেতে চান। রোমানিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চাইলে ৫-৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে। তবে, আপনি যদি কোনো দালালের সহযোগিতা নেন বা কোনো এজেন্সির সহযোগিতা নেন, তবে ৭-৮ লক্ষ টাকা অব্দি খরচ হতে পারে।
রোমানিয়া স্টুডেন্ট ভিসা বা রোমানিয়া ভিজিট ভিসায় যেতে চাইলে ৩-৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে। আপনি কোন পদ্ধতিতে ভিসা আবেদন করছেন তার উপর ভিসা ফি, ভিসা প্রসেসিং ফি এবং অন্যান্য ফি নির্ভর করে খরচ কম বা বেশি হতে পারে। তবে, ৪-৫ লক্ষ টাকা হলে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে রোমানিয়া যেতে পারবেন এবং যেকোনো কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাইরের দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে চায়। এদের মাঝে প্রায় অনেক শিক্ষার্থীর ইচ্ছে পর্তুগাল গিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া। পর্তুগাল যেতে সাধারণত ৭-৮ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় পর্তুগাল যেতে চান, তবে ৪-৫ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।
স্টুডেন্ট ভিসায় পর্তুগাল গিয়ে পার্ট টাইম কাজ করে টাকাও উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি চাইলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পর্তুগাল যেতে পারেন। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পর্তুগাল গেলে ৯-১০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। ভিসা ফি, ভিসা প্রসেসিং, এয়ার টিকেট, অন্যান্য আনুসাঙ্গিক খরচ মিলে ৯-১০ লক্ষ টাকা হলে পর্তুগাল যেতে পারবেন।
আমাদের দেশের অনেকেই মাল্টা গিয়ে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করছেন। তাই, অনেকেই মাল্টা যেতে আগ্রহী। আপনিও যদি মাল্টা যেতে চান, তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মাল্টা যেতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মাল্টা যেতে চাইলে ৬-৮ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তবে, আপনি যদি সরকারীভাবে VFS Global এর সহযোগিতা নিয়ে মাল্টা ভিসায় আবেদন করেন, তবে ২-৩ লক্ষ টাকায় মাল্টা যেতে পারবেন।
ভিসা এজেন্সির সহযোগিতা নিলে কিংবা কোনো দালালের সহযোগিতা নিলে মাল্টা যেতে অনেক বেশি খরচ হয়। তাই, নিজে থেকে সরকারীভাবে মাল্টা যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করুন।
যারা ইউরোপ গিয়ে টাকা উপার্জন করতে চান, তাদের মাঝে অনেকেই ইউরোপ গিয়ে কি কি কাজ পাওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন। আপনিও যদি ইউরোপ যেতে চান টাকা উপার্জন করার জন্য, তবে ড্রাইভার, রেস্টুরেন্টের কাজ, ক্লিনার, ওয়েল্ডিং এর কাজ, কৃষি কাজ, ফলের বাগানের কাজ সহ অনেক কাজ করতে পারবেন।
ইউরোপ গিয়ে বিভিন্ন ধরণের কাজ করে টাকা উপার্জন করা সম্ভব। ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গেলে সব ধরণের কাজ করতে পারবেন।
১০ দিন ইউরোপ ভ্রমণ করতে চাইলে ৩-৪ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। ভিসা ফি, ভিসা প্রসেসিং, এয়ার টিকেট সহ আরও অন্যান্য খরচ মিলে ৩-৪ লক্ষ টাকা লাগে। এছাড়াও, আপনি ইউরোপের যে দেশে যাবেন, সেখানে আলাদা খরচ হতে পারে।
ইউরোপের যেকোনো দেশে যেতে ১৮ বছর বয়সের বেশি হতে হবে। এছাড়াও, পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
ইউরোপ ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে সাধারণত ৮-১০ লক্ষ টাকা লেগে থাকে। তবে, দেশ ভেদে খরচ কম বা বেশি হতে পারে। ভিসা ফি, ভিসা প্রসেসিং, এয়ার টিকেট এবং আনুসাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে ৮-১০ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে এবং ইউরোপে কি কি কাজ পাওয়া যায় এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি, পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকলে ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে জানতে পারবেন।
Leave a Reply