১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করা অনেকের কাছেই অসম্ভব মনে হতে পারে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা এবং পরিশ্রম থাকলে ১০ হাজার টাকায়ও লাভজনক ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে এই পোস্টে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আপনি যদি ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে এই পোস্টটি আপনার জন্যই। হাতে থাকা ১০ হাজার টাকা দিয়ে আগামীকাল থেকেই শুরু করতে পারবেন একটি ব্যবসা। তো চলুন, ১০ হাজার টাকায় কি কি ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে জেনে নেয়া যাক।
১০ হাজার টাকা বাজেটে এলাকার বাজারে বা অনলাইনে অনেক ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। তবে, শুধু ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই আমরা একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবো না। এজন্য প্রয়োজন হবে অনেক কঠোর পরিশ্রম। তো চলুন, ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়ায় যেসব ব্যবসা রয়েছে –
১০ হাজার টাকা থাকলে আপনি উপরোক্ত যেকোনো একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনার যে ব্যবসাটি পছন্দ হয়, সেটি শুরু করতে পারেন। নিচে এই ব্যবসাগুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত উল্লেখ করে দিয়েছি।
অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করার জন্য আপনার হাতের মোবাইলটি ব্যবহার করতে পারেন। ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে চাহিদা রয়েছে এমন কাপড় ক্রয় করে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এজন্য, একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে কাপড় নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করতে হবে। এরপর,যখন ভালো ফ্যানবেজ তৈরি হবে, তখন আপনি কাপড় বিক্রি শুরু করতে পারেন।
অনলাইনে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে বই বিক্রির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বই বিক্রি করার জন্য ফেসবুক পেজ তৈরি করে সেখানে প্রতিনিয়ত বই বিষয়ক পোস্ট করতে হবে। এরপর, আপনি বই বিক্রির পোস্ট করতে পারেন। ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে বই ক্রয় করে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। এভাবে ব্যবসা চালিয়ে গেলে একসময় ১০ হাজার টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকার ব্যবসা হয়ে যাবে।
আপনার এলাকায় একটি মোবাইল রিচার্জের দোকান দিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। মোবাইল রিচার্জের দোকান দেয়ার জন্য প্রতিটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির একটি সিম ক্রয় করে রিটেইলার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর, এসব সিমে ব্যালেন্স লোড করে মোবাইল রিচার্জ করে দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
মোবাইল রিচার্জ করে দেয়ার বিনিময়ে কোম্পানি থেকে কমিশন দেয়া হয়ে থাকে। প্রতি হাজার টাকায় কমিশন দেয় কোম্পানিগুলো। এছাড়াও, আপনি প্রতি জনকে রিচার্জ করে দেয়ার বিনিময়ে ১ টাকা বেশি নিতে পারেন। এভাবে করে ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে ফ্রি সময়ে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
টেইলারিং এর দোকান দিয়েও ১০ হাজার টাকায় ভালো একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে টেইলারিং এর যাবতীয় সামগ্রি ক্রয় করতে হবে। এরপর, বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিতে পারেন অথবা বাসায় শুরু করতে পারেন। মানুষের থেকে কাপড় দিয়ে জামা তৈরির অর্ডার নিয়ে সেগুলো করে দিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়াগুলোর মাঝে এই আইডিয়াটি অনেকেই কাজে লাগিয়ে এখন স্বাবলম্বী। টেইলরের দোকান দেয়ার জন্য দর্জির কাজ জানতে হবে। সরকারিভাবে ফ্রিতেই দর্জির ট্রেনিং নিতে পারবেন। এজন্য আলাদা অর্থ ব্যয় করতে হবে না। এছাড়াও, অনেক সময় ট্রেনিং শেষে মেশিন ফ্রিতে দেয়া হয়। তাই, টেইলারিং এর দোকান দিয়ে ১০ হাজার টাকায় ভালো একটি ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
বাসায় খাবার তৈরি করে সেগুলো ডেলিভারি দিয়ে ১০ হাজার টাকার মাঝেই একটি ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। হোমমেড খাবারের অনেক চাহিদা এখন। অফিস বা ছাত্রাবাসে থাকে এমন অনেকেই বাইরের খাবার না খেয়ে হোমমেড খাবার খেতে ভালোবাসেন। তাই, আপনি হোমমেড ফুড তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
হোমমেড ফুড তৈরির ব্যবসা শুরু করতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে রান্নার সামগ্রি এবং প্রয়োজনীয় উপাদান ক্রয় করতে পারেন। এই ব্যবসায় তেমন আলাদা কোনো ইনভেস্ট করতে হয় না। তবে, ভালো রান্না করতে পারলে চাহিদা দিনদিন আরও বাড়বে।
রাস্তার পাশে অনেক খাবারের ভ্যান দেখেছেন নিশ্চয়ই? মাত্র ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে আপনিও একটি ফুডকার্ট বা ফুডভ্যানে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সাধারণত, সিঙ্গারা, পেঁয়াজু, চা সহ বিভিন্ন হালকা খাবার তৈরি করে এভাবে ব্যবসা করতে পারেন।
এছাড়াও, আরও নতুন নতুন অনেক আইডিয়া রয়েছে যা কাজে লাগিয়ে ভালো উপার্জন করতে পারবেন। যেমন – অনেকেই রাস্তার পাশে রুটির বান দিয়ে বার্গার তৈরি করে বিক্রি করে অল্প দামে। ফলে, অনেকেই এসব ভ্যান থেকে খাবার কিনে খায়। খাবারের মান এবং স্বাদ ভালো হলে চাহিদা অনেক বেশি হয়।
মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।
অনলাইনে বা এলাকা কিংবা কোনো স্কুল/কলেজের সামনে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে পুরনো বইয়ের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পুরনো বইয়ের চাহিদা অনেক বেশি। অনেকেই নতুন বই না কিনে পুরনো বই কিনে থাকে। আপনি অল্প দামে পুরনো বই কিনে বইয়ের গায়ে লেখা দামের উপর কমিশন দিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।
এভবে করে অনেকেই পুরনো বই বিক্রি করে থাকে।
কাঁচামালের দোকান দেয়ার জন্য আলাদা কোনো অভিজ্ঞতা লাগে না। দোকান ছাড়াও একটি কাঁচামালের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এজন্য, কাঁচামাল ক্রয় করে যেকোনো একটি বাজারে গিয়ে রাস্তার পাশে বা বাজারের ভিতর কাঁচাবাজারে গিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। আপনার সবজি যদি টাটকা হয়, তবে অনেকেই ক্রয় করতে ইচ্ছুক হবে।
মাত্র ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে অনেক ভালো একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন। পরিশ্রম করলে এই ব্যবসা থেকেই আপনার একটি দোকান হয়ে যাবে।
রাস্তার পাশে, বিভিন্ন পার্কের পাশে বা স্কুল/কলেজের পাশে ফুলের দোকান দিতে পারেন। এছাড়াও, যেকোনো বাজারে ফুলের দোকান দিতে পারেন। ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে একটি ফুলের দোকান দিয়ে আপনি প্রতি মাসে অনেক ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। পার্ক বা বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গায় ফুলের দোকান দিলে অনেক বেশি বিক্রি হয়।
এছাড়াও, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় ফুল বিক্রি বেড়ে যায়। তাই, ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়াটি কাজে লাগিয়ে একটি সফল ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন।
প্রতিটি সিজনে বিভিন্ন প্রকার ফল আসে। আপনি ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে একটি সফল ব্যবসা শুরু করতে পারবেন সিজনাল ফলের ব্যবসা শুরু করে। মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে সিজনাল ফল কিনে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। সিজনাল ফলের চাহিদা ভালো থাকার কারণে অল্প সময়ে বিক্রি হয়ে যায়।
ফল যদি টাটকা হয় এবং কোনো ভেজাল না থাকে, তবে অল্প সময়ে এই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে পারবেন। সিজনাল ফলের ব্যবসা করে অনেকেই ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছে।
এই পোস্টে আপনাদের সাথে ১০ হাজার টাকার ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করেছি। পোস্টে ১০ হাজার টাকার ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনার কাছে ১০ হাজার টাকা থাকলে আপনিও একটি সফল ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
Leave a Reply